১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত-ই-ইসলাম এর নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার আজ রাত ১০ঃ৩৫ মিনিটে। সকাল থেকেই কারাগার এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছিল। পুলিশ ও র্যাব ছিল সতর্ক অবস্থায়। পাশাপাশি সাদা পোষাকে ছিলেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যগণ। কারাগারের আরপি চেকপোস্ট সংলগ্ন দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয় দুপুরেই।
আজ বিকেলে তার পরিবার এর সদস্যদের কারাগারে আসতে বলা হয়, তার সাথে শেষ সাক্ষাৎ এর জন্য। প্রায় চল্লিসজন তার সাথে দেখা করেন। পুত্রের সাথে দেখা না হওয়ায় তিনি আক্ষেপ করেছেন।
রাতে তাকে দেয়া হয়, ভাত, মুরগীর মাংস ও ইলিশ মাছ। এরপর তিনি আদায় করেন এশার নামাজ। এরপর কারা নিয়ম অনুসারে ফাঁসির আসামির স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয় কারা ডাক্তারের মাধ্যমে। কাশিমপুর কারাগার জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মো. হেলাল উদ্দিন আসামিকে তওবা পড়ান ইসলামী রীতি অনুযায়ী। এরপর তাকে কনডেম সেল থেকে নেওয়া হয় ফাঁসির মঞ্চে।
এ নিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ষষ্ঠ অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকর হল।
অভিযোগ
তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ১১ প্রমাণিত হয়। এতে বলা হয়েছিল, ১৯৭১ সালে ঈদের পরে চট্টগ্রাম শহরের কোনো এক অজ্ঞাত স্থান থেকে মহান মুক্তিযোদ্ধা জসিমকে অপহরণ করে আন্দরকিল্লার ডালিম হোটেলে নিয়ে যায়। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলে মুক্তিযোদ্ধা জসিমের মৃত্যু হলে আরো পাঁচজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশসহ তার মৃতদেহ কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
ফাঁসি কার্যকর হবার পরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল বের হয়। শাহবাগের বিতর্কিত গণ জাগরণ মঞ্চে সমবেত হয় অনেকেই। তারাও উল্লাস করে ও আনন্দ মিছিল বের করে।
তবে, এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে পাকিস্তান ও যুক্তরাস্ট্র। উল্লেখ্য, যুক্তরাস্ট্র ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল ও পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করতে, তাদের সপ্তম নৌ বহর পাঠিয়েছিল। এমনিস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ ফাঁসির রায়ে তাদের বিরোধিতার কথা জানিয়েছে।