‘ইফতার’ একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো খাবার খাওয়া, নাশতা করা উপবাস ভঙ্গ করা ইত্যাদি। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় ইফতার বলতে রোজাদার ব্যক্তি সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহর (সা.) সুন্নাত অনুসারে যে হালকা খাবার গ্রহণ করে তাই ইফতার। পবিত্র রমজানের রোজা রাখা ফরজ এবং ইফতার করা সুন্নত।
আবু উমাম (রাঃ) থেকে মারফু হাদিস হিসেবে বর্ণিত হয়েছে যে, “প্রতিদিন ইফতারের সময় আল্লাহ্ কিছু মানুষকে (জাহান্নাম থেকে) মুক্ত করে দেন” [মুসানদে আহমাদ (২১৬৯৮), আলবানী ‘সহিহুত তারগীব’ গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘সহিহ’ আখ্যায়িত করেছেন]
রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন ইফতার করে, তার উচিত খেজুর দিয়ে ইফতার করে। তবে সে যদি খেজুর না পায়, তাহলে সে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কারণ পানি পাক-পবিত্র। (মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা : ৮৪৭, মুসনাদে আহমাদ : ১৬২২৫, সহিহ ইবনে খুজাইমা : ২৭৮, বায়হাকি শুআবুল ইমান : ৩৬১৫)
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করাও সুন্নত। আর এর মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশের প্রতি মুমিন বান্দার নিখাদ আনুগত্যের এক পরম অভিব্যক্তি প্রকাশিত হয়, যা মহান আল্লাহর নিকট অত্যন্ত প্রিয়।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: “মানুষ ততদিন পর্যন্ত কল্যাণে থাকবে, যতদিন তারা অবিলম্বে ইফতার করে।”[সহিহ বুখারী (১৯৫৭) ও সহিহ মুসলিম (১০৯৮)]
ইফতারের আগ মুহূর্তে বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া-
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
নিচের দয়াটিও বিশেষভাবে পড়া যায়-
اَلْحَمْدُ للهِ اَللّهُمَّ إنِّيْ أسْئَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْئٍ أنْ تَغْفِرَلِيْ.
উচ্চারণ : ‘আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিরাহমাতিকাল্লাতি ওয়াসিআত কুল্লা শাইয়িন আন তাগফিরলি।’
অর্থ : ‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য; হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে তোমার সর্ববেষ্টিত রহমতের উসিলায় প্রার্থনা করছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)
ইফতার এর দুয়া
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছি।