কল্যাণপুরে পাচ নম্বর সড়কের জাহাজ বাড়িতে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালায় সোয়াত। অভিজানটির নাম দেয়া হয় স্টর্ম ২৬। প্রচন্ড গোলাগুলিতে আই এস জঙ্গিদের ৯ জন নিহত হয়। অপারেশনের পুর্বে জঙ্গিরা বারান্দা দিয়ে পুলিশকে জানায়, তাদের উদ্দেশ্য, বাংলাদেশে খিলাফাত প্রতিষ্ঠা করা এবং তারা সিরিয়ায় আই এস এর খলিফার অনুসারী বলে জানায়। এমনকি তারা পুলিশকে বলে, তারাও যেন তাদের দলে যোগ দেয়। এভাবে তাদের সাথে কথা বার্তা চালাতে চালাতে পুলিশ পুরো ভবনটি ঘিরে ফেলে এবং ভবনটির তিন তলায় উঠে পরে। এরপরে পুলিশকে লক্ষ্য করে জঙ্গিরা পাঁচ তলা থেকে গুলি ছোরে এবং পুলিশও পাল্টা গুলি ছোরে। এ কে ৪৭ এর গুলিতে জঙ্গিদের দেহ ঝাঁজরা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা। নিহত ৯ জঙ্গির মাঝে ৪ জনকে সনাক্ত করা গেছে, বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায় নি।
তবে পুলিশ বলেছে এরা আই এস নয়, বরং যে এম বি এর সদস্য। পুলিশের ধারণা, গুলশান ও শোলাকিয়া হামলায় জড়িতদের সাথে এদের সম্পর্ক রয়েছে।
তাদের সকলেই কাল রঙের পোশাক পড়নে ছিল এবং মাথায় ছিল পাগড়ি। ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ এবং অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে ওই ভবনের বাকি মেস থেকে আরও সাতজনকে। গ্রেফতার করা হয়েছে ভবন মালিকের স্ত্রী মমতাজ পারভীন ও তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলামকে। ভবন মালিক আতাহার উদ্দিন আহমেদ প্রবাসী। তিনি এ মুহুর্তে বিদেশে অবস্থান করছেন।
ভবন থেকে দুজন জঙ্গি লাফ দেয়। এর মাঝে একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, অপর জঙ্গি হাসানের পা ভেঙ্গে যায় এবং পুলিশের গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পরে। তাকে আটক করা হয় আহত অবস্থায়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি তার নাম হাসান বলে জানিয়েছেন। পিতার নাম রেজাউল করিম এবং বাড়ি বগুড়ার জীবন নগরে বলে জানিয়েছে ওই জঙ্গি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে সে নিখোঁজ ছিল। তার বাবা কয়েক বছর পুর্বে মারা যায় এবং মা বগুড়ার একটি হাসপাতালে নার্স হিসাবে কর্মরত।
সোয়াত ও সি আই ডি ভবন তল্লাশি করছে। তল্লাশি শেষ না হওয়া না পর্যন্ত ভবন থেকে কাওকে বের হতে দেয়া হবে না এবং বাইরে থেকে কাওকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। ৫ তলা ওই ভবনটির অধিকাংশ ফ্ল্যাটেই মেস হিসাবে ভাড়া দেয়া হয়েছে। নিহত জঙ্গিদের লাশ ময়না তদন্ত করতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীদের মাঝে আতঙ্ক বিস্তার করছে এখনও।
ছবিঃ যুবাইর বিন ইকবাল, প্রেস বাংলাদেশ