যখন কোথাও ভাঙচুর হয় তখন সেখানে টাকা পয়সা, জিনিষপত্র লুটপাট হয়, কেউ যখন দুর্ঘটনায় পতিত হয় আহত হয়ে পড়ে থাকে, তখন তাঁর ঘড়ি খুলে নেয় কেউ কেউ, পকেট থেকে মোবাইল নেয় কেউ কেউ, মানিব্যাগ নেয় কেউ কেউ, তারপর কেউ কেউ আহত অসহায়কে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এগুলো মানুষের তৈরী করা দুর্যোগ ও দুর্ভোগ।
যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হবে, ভূমিকম্প হবে তারপর চলবে হাহাকার, শুরু হবে লুটপাট, যে যেটা হাতের কাছে পাবে সেটা নিয়ে পালিয়ে যাবে, কেউ কেউ ধর্ষিত হবে, কেউ কেউ মরে পড়ে থাকবে, আহতদের কাছে থাকা মোবাইল, ঘড়ি, টাকা পয়সা কেড়ে নিবে। হাসপাতালগুলোতে কেউ জায়গা দিতে পারবে না। কেউ ফ্লোরে কাঁতরাবে। রক্তের জন্য মানুষ দৌড়াবে। ইন্টারনেট থাকবে না, ফোন থাকবে না, আলো থাকবে না, বিত্তবানরা প্লেনে চেপে দেশ ছাড়বে।
একদিন রানা প্লাজার লোকগুলোকে বাঁচাতে সাধারণ মানুষ এক হয়েছিল, রানা প্লাজায় সেদিন হাজার খানেক মানুষ বাঁচাতে হিমসিম খেয়েছিল সবাই। এনাম মেডিকেলের ডাক্তাররা ছুটে এসেছিল। লাশের মিছিল দেখে আমরা কেঁদেছিলাম। কাছের স্কুলের দেয়ালে হারিয়ে মানুষগুলোর ছবি ভরে গিয়েছিল। আমরা হাজার সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর বিপর্যয় ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিলাম। আমাদের উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধার কার্যের জন্য যন্ত্রপাতির অভাবে অসহায় হয়ে গিয়েছিল। জেনারেটরের তেল শেষ হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণ মানুষ তেল দিয়েছিল, আরো যা যা লাগে দিয়েছিল।
সেদিনের মতন করে সাধারণ মানুষ আবার এক হবে। তখন ধর্ম, বিজ্ঞান সব মিলি মিশে এক শ্লোগান হবে, ” আমাদের বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে”। তখন যদি আমরা মানুষরা যদি লুটপাট বন্ধ না করতে পারি তখন হয়ত গৃহযুদ্ধে রূপ নিবে।
ভাবুন একবার আমরা মানসিকভাবে ভূমিকম্পের পরবর্তী অবস্থার মোকাবেলায় কতটুকু প্রস্তুত?
-অয়ন আহমেদ