বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের দাফন হয়েছিলো পাকিস্তান করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্থানে। কবরের সামনে লেখা ছিলো- ‘ইধার শো রাহা হ্যায় এক গাদ্দার’। প্রায় ৩৫ বছর ওখানে ছিলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। জানি এগুলো আজ সবাইকে তেমন ভাবে স্পর্শ করে না। আমরা এখন কুল ডুড। আমরা রাজাকার বন্দনা করে কোন এক আজব স্মার্টনেস ফ্রতিফলিত করতে চাই।
ডুড, দেশবিরোধীদের সাপোর্ট করা স্মার্টনেস না। সিনেপ্লেক্সে যখন জাতীয় সঙ্গীত হয় তখন ভাব নিয়া বইসা থাকা পার্ট না। কিংবা শ্রদ্ধা ভরে উঠে দাড়ানো কাউ কে দেখে কটু দৃষ্টি কিংবা হেলার দৃষ্টি দেয়াও স্মার্টনেস না। বীরশ্রেষ্ঠ দের ভুলে যাওয়া, তাদের অবদান অস্বীকার করা স্মার্টনেস না। বদর বাহিনীর কমান্ডারের জন্য মিন মিন করা স্মার্টনেস না।
টি-৩৩ বিমান উড়িয়ে নিয়া আসা বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান কে ধাওয়া করছিলো চারটি জঙ্গি বিমান। দ্যাট ওয়াজ এপিক। কুলনেস বুঝতে চাও ? হাবিবুর রহমান বীর বিক্রম পাকিস্তান নৌবাহিনীর দুই জাহাজ “এস.ইউ. ইঞ্জিনিয়ারস্ এল সি- ৩” এবং “এস টি রজার” ডুবায় দেয় চরে আটকাইয়া, দ্যাট ওয়াজ কুল ম্যান। তারপর হাবিব রে সবাই ডাকতো ‘জাহাজমারা হাবিব।’
কুলনেস এর গল্প লাগবে?
মেজর জেনেরেল খালেদ মোশাররফের নির্দেশনা ছিলো হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বিদেশী সাংবাদিক ও অতিথিরা থাকাকালীন ঢাকা শহরের পরিস্থিতি যে শান্ত নয় এবং এখানে যুদ্ধ চলছে তা বোঝানোর জন্য শহরের আশে-পাশে কিছু গ্রেনেড ও গুলি ছুড়তে হবে; কিন্তু দু:সাহসী এই তরুণেরা ঢাকায় এসে ৯ জুন তারিখে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে গ্রেনেড হামলা করেন ছিলো অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ ও অচিন্তনীয় কাজ। সন্ধ্যায় বিবিসির খবর থেকে খালেদ মোশাররফ এই অপারেশনের কথা জানতে পেরে বলেন, ‘দিজ অল আর ক্র্যাক পিপল! বললাম, ঢাকার বাইরে বিস্ফোরণ ঘটাতে আর ওরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এসেছে।’ তিনিই প্রথম এই দলটিকে “ক্র্যাক” আখ্যা দেন; যা থেকে পরবর্তীতে এই প্লাটুনটি “ক্র্যাক প্লাটুন” নামে পরিচিত হয়।
দ্যাট ওয়াজ ক্রাক ম্যান।
আজকের এই পার্টে তুমি কুল ডুড না ব্রো, তুমি একটা এসহোল। যে নিজের ইতিহাসে স্মার্টনেস পায় না।
শুভ জন্মদিন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান। মে বি আমি স্মার্ট না, কুল না। তবুও স্বাধীনতা যা তোমরা এনে দিয়েছো নিজের জীবন দিয়ে, নিরপেক্ষতার মোড়কে তা ব্যালেন্স করতে যাবো না কোনদিন। টি-৩৩ বিমান নিয়ে বাংলাদেশে ছুটে আসা যুদ্ধ করার জন্য, পিছনে দুটি ফাইটার জেট ধাওয়া করছে তা জেনেও…. আমাকে গর্বিত করে।
তোমার জন্য আজ কোন প্রথম পাতায় নিউজ পাইনি। কোন শোক মিছিল হয়নি। ভুলে গেছি সব আজ আমরা। তবুও ‘ক্ষ্যাত’ ‘ইনট্রোভার্ট’ এই সিডাটিভ এর ওয়ালে রাখলাম তোমাকে।
শুভ জন্মদিন বীরশ্রেষ্ঠ।