বেচে থাকার জন্য আমাদের দরকার খাবার। আমরা প্রতিদিনই এ খাবার গ্রহণ করছি। কিন্ত আসলে আমরা কি গ্রহণ করছি? আমরা যা খাই, সেগুলো কি আসলেই খাবার? এগুলোর মান কিরকম? বিভিন্ন রেস্তরাঁ ঘুরে দেখা গিয়েছে নানা ধরনের অসঙ্গতি। এগুলোর কোনটি বিলাসবহুল রেস্তরাঁ আবার কোনটি সাধারণ রেস্তরাঁ।
রেস্তরাঁগুলো সাধারণত সাজানো গোছান পরিপাটি হয়। নানা ধরনের খেলনা, স্যুভেনির, ছবি ও আরও অনেক কিছু দিয়ে সাজানো থাকে। ওয়েটারদের ব্যবহার হয় অমায়িক। আপনাকে স্বাগতম জানানোর রয়েছে কোন রূপবতী ললনা কিংবা সুদর্শন যুবক। নানা ধরনের আলোর ঝলকানী কিংবা মোমবাতির রোমান্টিক আলোয় রয়েছে খাবার গ্রহণের সুব্যবস্থা।
অধিকাংশ সময়ে অত্যন্ত নিম্নমানের সস্তা ও মেয়াদ উত্তীর্ন কাচামাল কিনে আনা হয় এসব রেস্তরাঁগুলোতে। একই তেল বার বার ব্যবহার করা হয়। মৃত মুরগী বা খাসী এসকল রেস্তরাঁর প্রধান উপকরণগুলোর একটি কেননা, এতে খরচ অনেক কম পরে। বাজার থেকে সাধারণত কম দামে পচা মাছ আনা হয় এবং তা বেশ কড়া করে অধিক পরিমাণ মশলা দিয়ে ভেজে নেয়া হয়, যাতে পচা গন্ধ না আসে। বেশ কিছু খাবারে ব্যবহার করা হয় বরফ। এ বরফগুল সাধারণত আনা হয় খোলা বাজার থেকে যেগুলো মাছ বা মৃত শরীর সংরক্ষণে ব্যবহার করা হয়। এমন কিছু উপাদান দিয়ে এসকল খাবার তৈরি হয়, যা মানব দেহের জন্য প্রচণ্ড ক্ষতিকর।
বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁর রান্না ঘর পরিদর্শনের সময়ে দেখে গিয়েছে খাবার তৈরি হচ্চে অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে। কেউই হাতে দাস্তানা পরিধান করে না। রান্নাঘরগুলতে তীব্র গরমে বাবুর্চিরা প্রচণ্ড ঘেমে যায় ও খাবারের সাথে সে ঘাম মিশ্রিত হয়। রান্নায় যে পানি ব্যবহার করা হয়, তা সাধারণত নোংরা পানি।
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের “ধারণা যত বেশি দাম, তত বেশি ভাল।” আর এ কারণে রেস্তরাঁ মালিকরা এসকল খাবারের উচ্চমুল্য রাখেন। কিছু কিছু খাবারের মুল্য উৎপাদন খরচের প্রায় চার থেকে পাঁচ গুন পর্যন্ত রাখা হয়। অবশ্য রেস্তরাঁ মালিকদের কথা অনুযায়ী তাদেরকে প্রতিমাসে বেশ মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হয়। তবে এ চাঁদা কাকে দিতে হয় সে ব্যপারে তারা কেউই কিছু বলেন নি। কেন দিতে হয়, জানতে চাইলে অনেকই বলেন, চাঁদা না দিলে দোকান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়, এমনকি প্রানে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। তাছাড়া ভবন মালিকরা প্রচুর ভাড়া আদায় করে থাকেন। পানি ও কোমল পানীয়তে MRP লেখা থাকার পরেও সেখান থেকেও আদায় করা অতিরিক্ত টাকা।
রেস্তরাঁগুলোতে আদায় করা ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ ভ্যাট। কিন্তু সরকারী কোষাগারে এ ভ্যাট জমা পরে খুব সামান্য।
পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান জানালেন, এসব খাবার গ্রহণ করলে, কোলন ক্যন্সার হবার সম্ভাবন বেড়ে যায়। কিডনিতে সমস্যা হতে পারে।
ইবন সিনা হাসপাতালের যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডঃ গালিব জানালেন এসব খাবার ও পানীয় গ্রহণের ফলে, পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
ছবিঃ যুবাইর বিন ইকবাল