দোয়া কুনুত (আরবি: القنوت) বিতর সালাতে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) মাঝে মাঝে দুয়া কুনুত পাঠ করতেন। এক/তিন/পাঁচ/সাত/এগারো রাকাত বিতের সালাতের শেষ রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে বা রুকু থেকে উঠে দুই হাত তুলে বা বেধে দুআ কুনুত পাঠ করতে হয়।
কুনুত শব্দের অর্থ কি?
আমরা সবাই বিতর নামাজে দোয়া কুনুত পড়ে থাকি। অনেকেই জানতে চান “কুনুত” শব্দের অর্থ কি? “কুনুত” একটি আরবি শব্দ। “কুনুত” শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে আনুগত্য করা।
اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
উচ্চারণ
আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা, ওয়া নাস্তাগফিরুকা, ওয়া নু’মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী ‘আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশকুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ক।
অর্থ
হে আল্লাহ আমরা তোমারই সাহায্য চাই, তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল, মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি অকৃতজ্ঞ হই না, এবং যারা তোমার অবাধ্য হয় তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদেরকে পরিত্যাগ করি। হে আল্লাহ আমরা তোমারই দাসত্ব করি তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি, আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত, আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
আহমদ বিন হাম্বল, মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত-তিরমিজি এবং আবু দাউদের বর্ণনা থেকে জানা যায় হাসান ইবনে আলী রাঃ এই দোয়াটি মুহাম্মাদের (সা.) কাছ থেকে শিখেছিলেন। দাউদ আরো বলেছেন যখন মুসলমানদের উপর কোন বিপদ অথবা বিপর্যয় আসতো তখন মুহাম্মদ (সা.) দোয়া কুনুত পড়তেন। “আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা, ওয়া নাস্তাগফিরুকা রয়েছে” মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা (৬৯৬৫)
ফজিলত
সব থেকে বড় ফজিলত হচ্ছে আমরা মানুষ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নগন্ন বান্দা হিসাবে তার কাছে নত হয়ে কায়মনো ব্যাক্যে নামাজে দাড়িয়ে মহান আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করে তার সাহায্য চাওয়া।
যখন বান্দা কায়মনো বাক্যে নামাজে দাড়িয়ে দোয়া কুনুতের বাক্য গুলো উচ্চারণ করে মহান আল্লাহ পাক তা কবুল করে নেন । মহান আল্লাহ পাক বান্দার প্রতি দয়া করে বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।
দোয়া কুনুত এর তাফসির
দোয়া কুনুত এর তাফসির বা ব্যাখ্যা হচ্ছে নামাজের মাধ্যমে বান্দা হিসাবে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে সাহায্য চাওয়া ও ক্ষমা ভিক্ষা চওয়া । মহান আল্লাহ পাক যে আমাদের রব তা স্বীকার করে তার কাছে নত হয়ে সাহায্য ও ক্ষমা কামনা করা ।
মহান আল্লাহর কাছে এই বলে প্রতিজ্ঞা করা যে আমরা আপনার উপর ভরসা করি এবং আপনার মঙ্গল কামনা করি । মহান আল্লাহ পাকের কাছে আরও প্রতিজ্ঞা করা যে আমরা আপনার শোকর করি, যারা আপনার অবাধ্য তাদের নিকট হতে দূরে থাকি ।
হে আল্লাহ! আমরা আপনারই উপাসনা- আরাধনা করি এবং আপনার কাছে মস্তক অবনত করি, আপনারই এবাদতের জন্যে সচেষ্ট থাকি এবং আপনারই অনুগ্রহের প্রত্যাশী ও আপনার আযাবকে ভয় করি । নিশ্চয়ই আপনার শাস্তি কাফেরদের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে।