আমাদের মাঝে অনেকেই মনে করেন যে ওজন কমাতে বা বাড়াতেই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হয়। কিন্তু বিষয়টি তেমন না। সুস্থভাবে বেঁচে থাকাতেই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে। জীবনের গুরুত্বপুর্ণ সময়টায় যেন বারবার ডাক্তারের নিকটে দৌড়াতে নাহয়, সেজন্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিবেন। জীবনের বার্ধক্যের সময়টা যেন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাটাতে নাহয়, সেজন্য আপনি পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিবেন। একেকজন মানুষের শারীরিক গঠন একেকরকম। একেকজন মানুষের একেরকম খাবার খেতে হবে। আর তাই একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদই কেবল পারেন, শারীরিক গঠন, বয়স ও রোগ অনুযায়ী আপনার জন্য সঠিক খাদ্য তালিকা তৈরী করে দিতে। সঠিক ও পুষ্টিকর খ্যাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে অনেক রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়। মানব জীবনের অধিকাংশ রোগের সাথেই রয়েছে পুষ্টির সরাসরি সম্পর্ক। তাই নিয়মিত পুষ্টিবিদের নিকট থেকে সঠিক খাদ্যভ্যাস এর তালিকে নিয়ে নিজেকে সুস্থ রাখা খুবই গুরুত্বপুর্ণ।
আমাদের অনেকেরই হয়ত ফ্যাটি লিভার আছে। আর ফ্যাটি লিভারের প্রধান চিকিৎসাই হচ্ছে সঠিক খাদ্যভ্যাস। আর এর পরামর্শ কেবল একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদই দিতে পারে। কোন ব্যক্তির রক্তের কোলেস্টেরল লেভেল অনেক বেশি, তিনি নিয়মিত কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধ খাচ্ছেন কিন্তু ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খাচ্ছেন না। এর ফলাফল শূন্য। এই কোলেস্টেরল কখনই কমবে না। ঔষধ বা ইন্সুলিন নিলেই যে ডায়াবেটিস ভাল থাকবে এমনটা ভাবা নিছক বোকামি। প্রায় সময়ে দেখা যায়, একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে চললে কোন প্রকার ঔষধ বা ইনসুনিল ছাড়াই অনেক ব্যক্তি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছেন।
বাচ্চা জন্মদেওয়ার পর বাচ্চা সঠিকভাবে পর্যাপ্ত পরিমানে বুকের দুধ পাবে কিনা সেটা মায়ের খাদ্যভ্যাসের উপরে নির্ভর করে। বাচ্চা জন্মদানের পরবর্তী সময়ে মা কতটা সুস্থ স্বাভাবিক থাকবে, সেটাও নির্ভর করে মায়ের সঠিক খাদ্যভ্যাসের উপরে। একটি বাচ্চা পৃথিবীতে ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর কিভাবে বেড়ে উঠবে বা কতটা সুস্থ অবস্থায় জন্ম নিবে বা সঠিক ওজন নিয়ে জন্ম গ্রহন করবে কিনা বা সন্তান কতটা মেধাবী হবে তার বেশিরভাগটাই নির্ভর করে মায়ের গর্ভকালীন সময়ের খাদ্যভ্যাসের উপরে।
যেহেতু একেকজন মানুষের শারীরিক গঠন একেকরকম, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যাভ্যাসও একেকজনের জন্য একেকরকম হবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। এছাড়া সঠিক খাদ্যাভ্যাসও বিভিন্ন রোগ থেকেও আপনাকে রাখবে সুস্থ।
আপনার শরীর ভাল রাখতে আপনার পরিবার, ডাক্তার আর একজন দক্ষ পুষ্টিবিদের বিকল্প কিছু নেই।